মেয়েদের খুশকি দূর করার সেরা উপায় জানুন
শুষ্ক ত্বকের ছোট ছোট টুকরো মাথার ত্বক থেকে ঝরে পড়ছে? এগুলো হলো ফ্লেকি স্কিন, যা আমরা খুশকি নামে চিনি।
আপনি এই ফ্লেক্সগুলি আপনার চুলে বা আপনার কাঁধে পড়ে থাকতে দেখবেন। খুশকি আপনার মাথার ত্বকেও চুলকানি সৃষ্টি করতে পারে। এটি একটি সাধারণ সমস্যা, তবে এটি যতটা সহজ মনে হয় তত সহজ নয়। খুশকি আসলে সংজ্ঞায়িত করা বেশ কঠিন, এটি একরকম চর্মরোগ।
কাদের খুশকির প্রবনতা বেশী?
তৈলাক্ত ত্বকের লোকেরা প্রায়শই খুশকির প্রবণতা বেশি করে। কি কি কারণে খুশকি হতে পারে?
সেবোরিক ডার্মাটাইটিসঃ খুব খারাপ রকমের খুশকি হতে পারে এর থেকে। তবে সবরকম খুশকির কারণ এটি নয়।
কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিসঃ এটি একরকম চুলকানি যাতে সম্ভবত বেদনাদায়ক ফুসকুড়ি হয়। খুশকির ক্ষেত্রে সেই প্রতিক্রিয়া হয় মাথার ত্বকে। আমেরিকান একাডেমি অফ ডার্মাটোলজি অ্যাসোসিয়েশন অনুসারে এটি সাধারণত চুলের যত্নের পণ্য বা হেয়ার কালারের কারণে ঘটে।
শুষ্ক ত্বকঃ যদি শীতের ঠান্ডা বাতাস আপনার মাথার ত্বক সহ সমস্ত ত্বককে শুকিয়ে দেয়, তাহলে শুষ্ক ত্বক আপনার খুশকির কারণ হতে পারে। অনেকের শীতকালে স্ক্যাল্প বা মাথার ত্বকের শুষ্কতা অনেক বেড়ে যায়, সেই থেকে কারো কারো খুশকি হতে পারে।
যাদের চুলে খুশকির প্রবণতা বেশী তারা যদি শ্যাম্পু করার ক্ষেত্রে অনেক দিন গ্যাপ দেন। অর্থ্যাৎ দীর্ঘদিন মাথায় তেল জমে থাকার কারণে খুশকি হয়।
বয়সঃ শিশুদের খুশকীর প্রবণতা একেবারেই কম। বয়ঃসন্ধিকালে এটি অনেক বেড়ে যায় আবার বয়সসীমা ৫০ পেরুলেই এর প্রকোপ কমতে শুরু করে।
সেক্সঃ অ্যান্ড্রোজেন হরমোন, যেমন টেস্টোস্টেরন, সেবেসিয়াস গ্রন্থিগুলির কার্যকলাপকে উদ্দীপিত করে। বেশি তেল মানে প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া এবং খুশকির সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়া। তাই নারীদের তুলনায় পুরুষরা খুশকিতে বেশি আক্রান্ত হয়।
দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাঃ অঙ্গ প্রতিস্থাপন করেছেন এমন রোগী এবং যাদের এইচআইভি বা এইডস, হেপাটাইটিস সি, ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগী, অটো ইম্যুন ডিজিজ আছে এমন, তাদের মধ্যে খুশকির প্রবণতা বেশি দেখা যায়।
বিভিন্ন স্কিন ডিজিজঃ অন্যান্য ত্বকের রোগের ইতিহাস যেমনঃ একজিমা, রোসেসিয়া, সোরিয়াসিস বা ব্রণ সেবোরিক ডার্মাটাইটিসকে বা এমন খুশকিকে ট্রিগার বা খারাপ করতে পারে।
তৈলাক্ত ত্বকঃ আপনার যদি প্রাকৃতিকভাবে তৈলাক্ত ত্বক থাকে তবে আপনি সেবোরিক ডার্মাটাইটিসের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন।
সারারাত চুলে তেল দিয়ে রাখা বা বেশীরভাগ সময়ে চুলে তেল দিয়ে রাখা। এতে চুলের গোড়া জমে থাকা ময়লা আরো শক্ত করে বসে যায় এবং ছত্রাক জন্মায়। এভাবে জন্ম হয় খুশকির।
খুশকি দূর করার উপায়
- প্রথমত স্ক্যাল্প পরিষ্কার রাখতে হবে
গোসলের আধ ঘন্টা আগে কুসুম গরম করে নেবেন। ড্যানড্রাফ এর জন্য আমলা অয়েল, টি ট্রি অয়েল, কোকোনাট অয়েল এবং অলিভ অয়েল ভালো কাজ করে। এর সাথে মেশাত পারেন এক টেবিল চামুচ লেবুর রস। তারপর একটি মাইল্ড শ্যাম্পু দিয়ে চুল পরিষ্কার করতে পারেন। কিছু কার্যকর শ্যাম্পুর নাম দেওয়া হলোঃ
- টি ট্রি শ্যাম্পু ব্যবহার
এটি অ্যান্টিসেপটিক, অ্যান্টিবায়োটিক এবং অ্যান্টিফাঙ্গাল হিসেবে কাজ করে। তাই খুশকির জন্য একটি নিরাপদ এবং কার্যকর চিকিৎসা।
- স্যালিসাইলিক এসিজ বেইসজ শ্যাম্পু।
- ডাক্তারেরে পরামর্শে অ্যান্টি ফাঙ্গাল শ্যাম্পু।
খুশকি দূর করার ঘরোয়া পদ্ধতি
টকদই, লেবুর রস, রিঠা পাউডার, পেঁয়াজের রস, মেথি এগুলোর মধ্যে যে কোন একটি উপাদান বেছে নিন এবং তার সাথে কুসুম গরম করে নেওয়া নারকেল তেল মিশিয়ে চুলে লাগান, ৩০ মিনিট পর শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
মেনে চলতে হবে আরো কিছু নিয়ম যেমনঃ
- সারারাত মাথায় তেল দিয়ে রাখা যাবেনা।
- সবসময় পরিষ্কার বালিশের কভারে ঘুমাত হবে। তাই দুইদিন পর পর বালিশের কভার চেইন্জ করবেন।
- অন্য কারো চিরুনি ব্যবহার করবেন না।এবং নিজের ব্যবহার করা চিরুনি পরিষ্কার রাখুন।
- গোসলের পর চুল দ্রুত শুকিয়ে নিন।
- মেয়েদের চুল লম্বা বলে বেঁধে রাখার প্রয়োজন পড়ে। তবে কখনোই ভেজা চুল বেধে রাখবেন না।
- অনিয়ন্ত্রিত সমস্যায় চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
এ্যান্টি ডেন্ড্রাফ প্রসাধনী সামগ্রী ব্যবহারে চুল রুক্ষ হয়ে যেতে পারে। তাই শ্যাম্পু করার পরে ভেজা চুলে হেয়ার সিরাম লাগাতে ভুলবেন না যেন!