মাখনের মতো নরম ত্বক পেতে যা করবেন
সতেজ, দাগহীন,প্রানবন্ত ত্বক যেন সবার স্বপ্ন! আর সেই সাথে যদি পাওয়া যায় মাখনের মতো নরম ত্বক?
তাহলে তো সোনায় সোহাগা! কি করতে হবে? আসুন জেনে নেওয়া যাক -
নরম ত্বক পেতে যা যা করবেন
দৈনিক এক্সফোলিয়েটিং মসৃণ ত্বক পাওয়ার জন্য আপনার ত্বকের মরা চামড়া তুলে ফেলা আপনার প্রথম কাজ হওয়া উচিত। আপনি যখন এক্সফোলিয়েট করেন তখন এটি ত্বকের ময়লা, অতিরিক্ত তৈল এবং মরা চামড়া তুলে ফেলে।
দৈনিক ভালো ব্র্যান্ডের সোপ বা বডি ওয়াশ ব্যবহার করতে হবে। মুখের ত্বক শরীরের তুলনায় অধিক নাজুক বলে মুখের জন্য পিএইচ ব্যালেন্স ফেইসওয়াশ ব্যবহার করুন।যারা প্রতিদিন বাইরে যান এবং মেকাপ করেন তারা মেকাপ না তুলে কখনোই ঘুমাত যাবেন না।
যাদের ত্বক শুষ্ক তারা অবশ্যই মশ্চারাইজার সমৃদ্ধ সাবান, বডি ওয়াশ এবং ফেইস ওয়াস বা ক্লিনসার ব্যবহার করবেন। সপ্তাহে অন্তত একদিন স্ক্রাবিং করুন। স্ক্রাবিং মৃত ত্বকের কোষগুলোকে অপসারণ করতে এবং মসৃণ, নরম ত্বকের আবহ দিতে খুবই কার্যকর।
গরম পানি দিয়ে গোসল এড়িয়ে চলুন
গরম পানি আপনার ত্বকের পোর বা ছিদ্র খুলে দেয় এবং প্রাকৃতিক তেল এবং আর্দ্রতা ধুয়ে দেয় ফলে ত্বক হয়ে উঠে প্রানহীন। তাই ওজু-গোসলে ঠান্ডা পানি ভালো। তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা যেতে পারে।
ত্বক ময়েশ্চারাইজ করুন
দুর্ভাগ্যবশত ময়শ্চারাইজিং সাবান, ফেইস ওয়াস এবং বডি ওয়াশ আপনার ত্বককে সারাদিন কোমল এবং মসৃণ রাখতে যথেষ্ট নয়। আপনার ত্বককে ২৪ ঘন্টা আর্দ্রতা প্রদানের জন্য প্রকৃত ময়শ্চারাইজিং ক্রিম বা লোশনের উপর নির্ভর করতে হবে। সুতরাং ত্বকের ধরণের অনুযায়ী পণ্য খুঁজে বের করুন। এক্ষেত্রে ত্বক পরিষ্কার করার যেভাবে ধারাবাহিকতা রক্ষা করে ত্বক মশ্চারাইজ রাখবেন তা হলো -
- আপনার মুখ পরিষ্কার করার পর প্রথমেই টোনার ব্যবহার করুন। এক্ষেত্রে গোলাপজলের টোনার ত্বকের পিএইচ ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে।
- ত্বকের উপযুক্ত সিরাম লাগাতে পারেন।
- এরপর অলিভ অয়েল বা শিয়া বাটার মশ্চারাইজার (শুষ্ক ত্বকের জন্য) এবং অ্যালোভেরা জেল(তৈলাক্ত ত্বকের জন্য) ব্যবহার করতে পারেন।
ঘরে তৈরি কিছু মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন। যেমনঃ
- মধু এবং লেবুর রস মিক্স করা পেস্ট
- টকদই এবং শসা ব্লেন্ড করে পেস্ট
নিয়মিত ব্যায়াম করুন
নিয়মিত ব্যায়াম আপনার রক্ত সঞ্চালন বাড়ায় তাই আপনার ত্বক হয়ে উঠে উজ্জল এবং প্রাণবন্ত।ঘাম আপনার ত্বকের মৃত কোষ এবং তেল পরিষ্কার করতে সহায়ক। এক্ষেত্রে লং ওয়াকিং এবং ব্রিদিং এক্সারসাইজ ত্বকের গ্লো ফিরিয়ে আনতে খুবই কার্যকর।
স্বাস্থ্যকর খাবার খান
ব্যায়ামের মতোই সুষম খাদ্য খাওয়া স্বাস্থ্যকর এবং মসৃণ ত্বক তৈরিতে কার্যকর ভূমিকা রাখে।স্বাস্থ্যকর চর্বিযুক্ত খাবারগুলি স্বাস্থ্যকর ত্বকে সরাসরি অবদান রাখে। এর মধ্যে রয়েছে কিছু তৈলাক্ত মাছ যেমন ইলিশ, বোয়াল, পাবদা ।
বিভিন্ন বাদাম যেমন কাঠবাদাম, চিনাবাদাম,আখরোট এবং সূর্যমুখী বীজ, সবুজ শাক সব্জি যেমন পালং শাক, ব্রকলি,আবার বিটরুট এবং মিষ্টি আলু। ফলের মধ্যে সবুজ আপেল, পেপে, আমলকি, ডালিম/আনার, পেয়ারা, মাল্টা বা কমলা লেবু ইত্যাদি। এই খাবারগুলির বেশিরভাগই ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং এ্যান্টি অক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ যা স্বাস্থ্যকর ত্বক বজায় রাখতে গুরুত্বপূর্ণ।
হাইড্রেটেড থাকুন
ডিহাইড্রেশন শুষ্ক, রুক্ষ ত্বকের অন্যতম প্রধান অপরাধী। যখন ডিহাইড্রেটেড অর্থাৎ পানিশূন্য শরীর টক্সিন বের করতে পারেনা। এছাড়াও পানিশূন্যতা আপনাকে বিভিন্ন চর্মরোগে আক্রান্ত করতে পারে যেমনঃ একজিমা ও সোরিয়াসিস। ত্বকে বয়সের ছাপ পড়ার জন্যও এটি অনেকাংশে দায়ী। সুতরাং শরীরকে পর্যাপ্ত জল সরবরাহ করার জন্য দিনে অন্তত ৮-১০ গ্লাস পানি পান করুন।
সানস্ক্রিন ব্যবহার করুন
অরক্ষিত অবস্থায় সূর্য ত্বককে শুকিয়ে বলিরেখা সৃষ্টি করে এবং স্ক্যালিনেস (চামড়া ওঠা) তৈরি করে মারাত্মকভাবে ক্ষতি করতে পারে। সানস্ক্রিন আপনার ত্বক এবং সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির মধ্যে বাধা হিসেবে কাজ করবে। অনেকে মনে করে থাকেন যে বাসায় থাকলে অথবা শীতকালে সানস্ক্রিন ব্যবহারের প্রয়োজন নেই।
এটি সম্পূর্ণ ভুল। কারণ দিনের বেলায় আমাদের বাড়ির ভেতরেও সূর্যের আলো প্রবেশ করে। আর শীতকালে তাপমাত্রা কম থাকলেও সূর্যের আলো কিন্তু ঠিকই প্রবেশ করছে। সানস্ক্রিন আবার সূর্যের ক্ষতিকারক রশ্মি থেকে বাঁচিয়ে আপনার স্কিন ক্যান্সারের ঝুঁকিও কমায়।
পর্যাপ্ত ঘুম ও রিলাক্সেশন
প্রতিদিনের রুটিনে একটি ভাল ঘুমের সময়সূচী আপনার স্বাস্থ্যকর ত্বক অর্জনের জন্য নেওয়া সেরা পদক্ষেপগুলোর মধ্যে একটি। ঘুমের সময় শরীর নিজেকে রিপেয়ার করে নেয়। নিজের ত্বককে প্রানবন্ত রাখতে পর্যাপ্ত ঘুম এবং রিলাক্সেশন ম্যাজিকের মত কাজ করে।